November 21, 2024, 8:22 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এখন সময়ের হিসাবে। ইতোমধ্যে প্রতীক বরাদ্দ পেয়েই প্রচার শুরু করেছেন প্রার্থীরা। মাঠে বড় দল হিসেবে বিএনপি নির্বাচনে না এলেও নির্বাচন বেশ জমজমাট হওয়ার আভাস মিলেছে। কোথাও আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সঙ্গে স্বতন্ত্র, কোথাও জাতীয় পার্টি, কোথাও অন্য দলের প্রার্থীর সঙ্গে তুমুল লড়াই হওয়ার জোর সম্ভাবনা রয়েছে। সারা দেশে ৩০০ সংসদীয় আসনের মধ্যে ১২৬টিতে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সেই সাথে খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় ৩৬ আসনের মধ্যে বেশকিছু আসনে লড়াই হবে বলে মনে করছেন রাজিৈনতক বিশ্লেষকগণ। তারা বলছেন এই বিভাগের অনেক আসনে নির্বাচিত অনেক নেতাই জনগনের কাছে জনপ্রিয়তা হারিয়েছেন। সেই সব আসনগুলোতে ভোটে লড়াই হবে বলছেন তারা।
মেহেরপুর-১ আসনে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সংসদ সদস্য আবদুল মান্নান এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সংসদ সদস্য জয়নাল আবেদীন। এই আসনেফরহাদ পূর্বের মতো জনপ্রিয়তার আসনে নেই। জেলা আওয়ামী লীগে নানা ধরনের মেরুকরণের কারনে বিপুল সংথ্যক নেতা-কর্মী তার হাত থেকে ফসকে গেছে। মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে অনেকেই। মেহেরপুর-২ আসনেও একই অবস্থা এই আসনে স্বতন্ত্র নির্বাচন করছেন ডা. সাগর। তার সাথে ফরহাদকে লড়াই করেই জিততে হবে। প্রফেসার আবদুল মান্নানকে জিতাতে ফরহাদ হোসেনের বিরুদ্ধে এবার ঐক্য গড়েছেন দলের সাবেক সংসদ সদস্যসহ দলীয় জ্যেষ্ঠ নেতারা।
যশোর-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়েছেন মো. তৌহিদুজ্জামান তুহিন। এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগের এমপি জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্মসম্পাদক মনিরুল ইসলাম ও চৌগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এস এম হাবিবুর রহমান। যশোর-৩ আসনে বর্তমান এমপি কাজী নাবিল আহমেদ এবারও নৌকার প্রার্থী হয়েছেন। একই দল থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহিত কুমার নাথ। যশোর-৫ আসনে নৌকার প্রার্থী হয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য। তবে এবার তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা এস এম ইয়াকুব আলীর চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বেন। যশোর-৬ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার। অন্য আসনগুলোর মতো এখানেও তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা এইচ এম আমির হোসেনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বেন।
সাতক্ষীরা-২ আসনে জাতীয় পার্টিকে আসন ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন দুবারের নির্বাচিত বর্তমান এমপি জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহম্মেদ রবি।
খুলনা-৪ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবদুস সালাম মুর্শেদীর বিপক্ষে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য এস এম মোর্ত্তজা রশিদী সুজার ভাই এস এম মোর্ত্তজা রশিদী দারার হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। খুলনা-৬ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মো. রশিদুজ্জামানের সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ জিএম মাহবুবুল আলমের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।
চুয়াডাঙ্গা-২ আসনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আলী আজগার (নৌকা) এবং কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য আবু হাশেম রেজার (ট্রাক) সঙ্গে।
কুষ্টিয়া-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য ও রাকসুর সাবেক ভিপি আ কা ম সরওয়ার জাহান বাদশাহ্র সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে সাবেক এমপি রেজাউল হক চৌধুরীর। দুজনই যথাক্রমে দৌলতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সহ-সভাপতি। এ ছাড়াও প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলবেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী প্রয়াত কোরবান আলীর ছেলে জাতীয় পার্টির প্রার্থী শাহারিয়ার জামিল। কুষ্টিয়া-২ আসনে নৌকার প্রার্থী জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি। তিনি ১৪ দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে জাসদের ভোটের সঙ্গে আওয়ামী লীগের ভোট যোগ করে এর আগে জয়লাভ করে আসছেন। কিন্তু এবার মিরপুর উপজেলা পরিষদ থেকে পদত্যাগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামারুল আরেফিন। তাদের দুজনের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। কুষ্টিয়া-৪ আসনে নৌকা নিয়ে লড়ছেন বর্তমান এমপি বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার সেলিম আলতাফ জর্জ। তার বিপরীতে শক্ত স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক এমপি কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য আবদুর রউফ। গ্রামাঞ্চলে সাধারণ মানুষের কাছে রউফের জনপ্রিয়তা রয়েছে। অন্যদিকে সেলিম আলতাফ জর্জও বিগত চার বছরে দলের নেতা-কর্মীদের সাথে ব্যাপক দুরত্ব তৈরি করেছেন। দলের কেউ না হয়েও তিনি দলের নমিনেশন বাগিয়ে নেন এক কেন্দ্রীয় নেতার আত্মীয় হবার সুবাদে। ভোট বিহীন নির্বাচনে তিনি এমপি হলেও এবার তাকে ভোট করতে হচ্ছে। দলের বেশীরভাগ নেতা-কর্মীরা তার সাথে নেই।
ঝিনাইদহ-৩ আসনে ত্রিমুখী লড়ায়ের সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতিন্দন্দ্বিতায় থাকছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মেজর জেনারেল (অব.) সালাউদ্দিন মিয়াজী, স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য শফিকুল আজম খান চঞ্চল (ট্রাক প্রতীক) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার নবী নেওয়াজ (ঈগল প্রতীক)।
নড়াইল-২ আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মাশরাফী বিন মর্তুজার মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হচ্ছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি মনোনীত প্রার্থী সাবেক এমপি শেখ হাফিজুর রহমান (হাতুড়ী প্রতীক)।
Leave a Reply